মুরাদনগরে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ সমাবেশ

মুরাদনগরে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ সমাবেশ

সংযোগ ডেস্ক: 
কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে নির্যাতনকারী ও ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গাইবান্ধায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।  বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট গাইবান্ধা জেলা শাখার আয়োজনে সোমবার শহরের ডিবি রোডে গানাসাস মার্কেটের সামনে এ কর্মসূচী পালিত হয়। 
জেলা ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি পরমানন্দ দাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারী মুক্তি কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পী, মাসুদা আক্তার, কলি রানী বর্মন, কামরুল হাসান বসুনিয়া, জয়নুল ইসলাম প্রমুখ। 
বক্তারা বলেন,  গত ২৬ জুন কুমিল্লার মুরাদনগরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে এক নারীকে নির্যাতন এবং ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়- যা কোন সভ্য সমাজে চলতে পারে না। নারীকে সমাজে নিকৃষ্টভাবে উপস্থাপন করে বাস্তবে মানব সভ্যতাকেই অপমান করা হয়েছে। বক্তারা আরো বলেন, একটা সমাজের গনতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চা কতটুকু ভঙ্গুর তা এই ঘটনায় স্পষ্ট বোঝা যায়। অতীতে দেখা গেছে, ধর্ষণ গণধর্ষণের ঘটনাগুলোর বিচার হয়নি। ধর্ষকরা ক্ষমতার ছত্রছায়ায় নিরাপদে থেকেছে। গণঅভ্যূত্থানের মধ্য দিয়ে শত সহস্র রক্তের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তার ব্যতিক্রম হবে এটাই সবার চাওয়া ছিল। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের বীরত্বপূর্ণ ভুমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু গত ১১ মাস ধরে আমরা দেখছি নারীকে নানাভাবে নিপীড়ন করা হচ্ছে। সাইবার বুলিং, মব, ধর্ষণ-গণধর্ষণ, নারীকে নানাভাবে আক্রমণ, অশ্লীল গালিগালাজ, হেনস্থা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নারী নির্যাতন নিপীড়নের প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয় কোন দৃষ্টান্তমূলক উদ্যোগ আমরা দেখছি না।
বক্তারা আরো বলেন, একটি অপরাধের বিচার না হলে শত অপরাধ জন্ম নেয়। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়েও দেখা গেছে- নৌকা মার্কায় ভোট না দেয়ায় গৃহবধূকে ধর্ষণ, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে লোমহর্ষক ধর্ষণ, এমসি কলেজে ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্বারা গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সেগুলোর দৃষ্টান্তমূলক তেমন কোন শাস্তি হয়নি। বক্তারা আক্ষেপ করে বলেন- অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিজেদের নারীবান্ধব ঘোষণা করেছেন, কিন্তু এই সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর বিচার না হওয়ায় সরকারের সদিচ্ছা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। ঘরে-বাইরে নারীসহ সকল মানুষের নিরাপত্তা দিতে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে রাষ্ট্রকে আরও কার্যকর ভুমিকা নিতে হবে। সম্প্রতি, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় ধর্ষক গণপিটুনিতে মৃত্যুবরন করে এর মধ্যে দিয়ে বোঝা যায় যে মানুষের মধ্যে আইনের প্রতি আস্থা এবং বিশ্বাস না থাকার কারনে এধরণের ঘটনা ঘটছে। এর জন্য মুলত বিচারহীনতার সংস্কৃতি দায়ী। পাশাপাশি সকল গণতন্ত্রমনা মানুষকে নারী নিপীড়ক-ধর্ষকদের বিরুদ্ধে গনআন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান তারা।