প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে জীবন দেখা যায় যেখানে
ভ্রমণ

কায়সার রহমান রোমেল:
বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হয়ে মধ্যম আয়ের দেশ। ফলে মানুষ এখন একটু সময়-সুযোগ পেলেই বেড়াতে যায়। সেই চাহিদা পুরণ করতে দেশের পর্যটনশিল্প বিকশিত হচ্ছে। দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও জেলাগুলোর মতো পর্যটনে অনেকটাই এগিয়ে গেছে গাইবান্ধা।
দেশের উত্তর জনপদের অন্যতম আকর্ষনীয় অবকাশ যাপন ও বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে গাইবান্ধার এসকেএস ইন্-এর নাম উঠে আসে। বর্তমানে পর্যটক ও বিনোদনপ্রিয় মানুষের কাছে এসকেএস ইন্ অনেক জনপ্রিয় স্থান। এটি মূলত একটি চার তারকা মানের রিসোর্ট হলেও, এখানে রয়েছে বিনোদনের নানা আয়োজন। ছুটি কাটাতে এখন চাইলেই উত্তরের নদী বিধৌত গাইবান্ধা জেলা শহরের কাছেই বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ আর সবুজের কোলঘেঁষে নানা বৃক্ষরাজীর ও প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে বাস করা যাবে, আর তার জন্য অতিথি আপ্যায়ন করতে প্রস্তুত আছে ‘এসকেএস ইন্’।
ঈদ উৎসব ঘিরে দেশের অন্যান্য স্থানের মতো গাইবান্ধার বিনোদন কেন্দ্র, হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁ, রিসোর্টসহ পর্যটন ও বিনোদন সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নতুন রূপে সাজতে শুরু করেছে। সেইসাথে এসকেএস ইন্ নতুন করে সাজাতে ব্যস্ত কর্তৃপক্ষ। কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রশিক্ষণ, রং ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ সব দিকে খেয়াল রাখছেন তারা। তারা বলছেন, গত দু’বছর করোনা বিধি-নিষেধে ঈদ মৌসুমে অতিথি-দর্শনার্থীরা রিসোর্ট-এ আসতে পারেননি, এবার তারা সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না। ঈদুল ফিতরের ছুটি কাটাতে অতিথিরা আসবেন। এখন থেকে বুকিংও শুরু হয়ে গেছে। ঈদ প্যাকেজে ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশের বেশি বুকিং সম্পন্ন হয়েছে। আর এই আনন্দ সময়টাকে আরও সুন্দর করতে, গোটা রিসোর্টকে নতুন ভাবে সাজাতে এবং বিনোদন কেন্দ্রের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ করেছেন তারা, যেন অতিথি-দর্শনার্থীদের আকর্ষণ বাড়ে।
ঝলমলে নগর সভ্যতার মোহ আর যান্ত্রিকতা ছেড়ে পরিবার-পরিজন ও সন্তানদের নিয়ে লম্বা কিংবা স্বল্প সময়ের ছুটি কাটাতে নিশ্চিন্তে অবকাশ যাপনের সুব্যবস্থা রয়েছে এসকেএস ইন্-এ। এখানে প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে জীবন দেখা যায়। এখানে যেমন আছে প্রকৃতির শান্ত-শ্যামল ছোঁয়া, তেমনি আছে নান্দনিক স্থাপত্য ও আধুনিকতা। এই মনোহর প্রাকৃতিক আবহ, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, আকর্ষণীয় স্থাপত্য ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার জন্য সবার কাছেই পছন্দের বেড়ানোর জায়গা হিসেবে জনপ্রিয় উঠছে এসকেএস ইন্। রিসোর্টটি এতটাই নিখুঁতভাবে সাজানো যে এর বাইরে কোথাও না গিয়েও অবকাশের সময়টুকু আনন্দের সঙ্গে কাটানো সম্ভব। এখানকার নান্দনিকতা আর আন্তরিক আতিথেয়তা দেশের বাইরের কোনো হোটেল বা রিসোর্টের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও আধুনিকতার দুর্দান্ত সমাহার, বন-বনানীতে ঘেরা পাখির কলকাকলিতে পরিপ‚র্ণ এই রিসোর্ট-এ থাকার জন্যই অন্য শহর থেকে অতিথিরা আসেন। স্থানীয় দর্শনার্থীরাও আসেন প্রতিদিন।
২০১৬ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা জেলা সদরের রাধাকৃষ্ণপুর এলাকায় সাত একর জায়গা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে এসকেএস ইন্। বর্তমানে ২১.৩ একর জায়গাজুড়ে এর পরিধি বেড়েছে। ঢাকাসহ দেশের যেকোন স্থান থেকে বাস কিংবা ট্রেনে গাইবান্ধা আসা যায়। গাইবান্ধা বাসস্ট্যান্ড এবং রেলওয়ে স্টেশন থেকে সিএনজি অটো রিক্সা, ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, রিক্সা কিংবা ব্যক্তিগত যানবাহনে চড়ে ৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আসা যায় এসকেএস ইন্-এ।
এসকেএস ইন্-এর জেনারেল ম্যানেজার স্যামুয়েল হিলারী জানান, রমজান মাসে তেমন অতিথি-দর্শনার্থী থাকে না। তাই ঈদে যেসব অতিথি-দর্শনার্থী আসবেন আমরা তাদের সার্বিক সুবিধার কথা চিন্তা করে সেবার মান বৃদ্ধিসহ সব কিছুর উন্নয়নে কাজ করেছি। ভ্রমণ, রাত্রি যাপন, বিয়ে, গায়ে হলুদ, জন্মদিনসহ যেকোন অনুষ্ঠান আয়োজন কিংবা অবকাশ যাপন ও বিনোদনের জন্য আন্তরিক সেবা এবং সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার নিশ্চয়তা দিচ্ছে এসকেএস ইন্। অতিথি সেবায় এখানে রয়েছে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ কর্মী, নিরাপত্তায় রয়েছে সার্বক্ষণিক সিসি ক্যামেরা ও প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা বাহিনী, রয়েছে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুত সরবরাহের ব্যবস্থা। এছাড়াও রাত্রি যাপনের জন্য রয়েছে বিলাসবহুল ৬২টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ ও ২২টি রিভার কটেজ, সুস্বাদু নানা পদের খাবার, চিলড্রেন জোন, বোটিং, আউটডোর গেমের সুযোগ, সুবিশাল সুইমিং পুল, স্টিম ও সোলা বাথ, জিম, মিনি চিড়িয়াখানাসহ বাউল কুঠিরে প্রতিদিন লোকগানের আসর এসকেএস ইন্-এর অন্যতম আকর্ষণ। এসব উপভোগ করা যায় বাজেটের মধ্যেই।